জনগন ভোট দিতে আসুক

বর্তমান নিবার্চন কমিশনের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ জনগনকে ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা। সঠিক গণতন্ত্রচর্চা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। জবাবদিহিতা না থাকলে সীমাহীন দুর্নীতিসহ একটি দেশের সামগ্রিক ধ্বস নামতে পারে। আর এই জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় ভোটের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীল থাকলেও আগামী ৫ বছরে এটি কোথায় থাকবে সেই নিশ্চয়তা দেয়া কঠিন। বৈদিশিক রিজার্ভ ৪০-৪৫ বিলিয়নের মধ্যে উঠা-নামা করছে। রেমিটেন্স ও গার্মেন্টস নির্ভর বৈদিশিক রিজার্ভ। স্বস্তি এনে দিয়েছে কৃষি। কেননা এত বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্যপন্য আমদানি নির্ভর হলে, তা এত কম রিজার্ভ  দিয়ে মেটানো কঠিন।  মেগাপ্রকল্পগুলোর প্রারম্ভিক বাজেট ও প্রকল্প সমাপনী বাজেট দেখলে যে কারও অবাক হওয়ার কথা। প্রারম্ভিক বাজেটের দ্বিগুন বা তারও বেশি খরচ লাগছে প্রকল্প শেষ করতে। স্পষ্টত দুর্নীতিকে আড়াল করার কোন সুযোগ নেই। গণতন্ত্রহীন সমাজে দুর্নীতিতে কোন লাগাম থাকে না। 

একই সরকার ১০ বছর বা তারও অধিক ক্ষমতায় থাকতে পারে। কিন্তু জনগণকে সেটি চাইতে হবে। সঠিকভাবে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতিকে লাগাম টেনে ধরতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে। সরকারি অফিসে দুর্নীতি এখন যেনো সাধারণ ব্যাপার। আমলারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে (মন্ত্রীর ভাষ্যমতে)। দু-একটি বাদে সরকারি সব ধরনের নিয়োগে বাণিজ্য হচ্ছে। বদলিতে বানিজ্য হচ্ছে। ছোট-খাট বিষয় আর নাই বা উল্লেখ করলাম। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে সবাই হিমশিম খাচ্ছে। পরিবারের একজন সরকারি চাকুরি করেও সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। 

সরকারি কর্মকর্তা, সংসদ-সদস্য, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ সবার সম্পদের পরিমাণ জনগণের সামনে তুলে ধরা হোক। দুদক সেটিকে ক্রস চেক করুক। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর আইন প্রণয়ন করা হোক। হাজার কোটি টাকা কারা বিদেশে পাচার করছে, তার তালিকা তৈরী করা হোক। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক।

দেশের জনগণ সুখে থাকতে চায়। কোন সরকার তাদের সুখে রাখলো সেটা বড় ব্যাপার নয়। আপনি যত বছর ইচ্ছে ক্ষমতায় থাকুন, কিন্তু জনগনের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে, ভালো কাজ করে ক্ষমতায় বার বার আসুন। স্বাগতম। যদি রাজনীতিতে স্বৈরতান্ত্রিকতা আসে, জবাবদিহিতা না থাকে, সুষ্ঠু গণতন্ত্র না থাকে, মানুষ সঠিকভাবে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করতে না পারে, তবে অন্য সব কাঠামো ভেঙ্গে পরতে সময় লাগে না। সেই সাথে অন্য সব অর্জনও ম্লান হয়ে যায়। এটি সব দেশের জন্যই সত্য। 

আশা করছি, দেশে একটা সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে তাদের নেতা নির্বাচন করুক। নির্বাচনটি হোক একটি অহিংস ও শান্তির্পূণ নিবার্চন। জনগন ভোট দিতে আসুক।

মন্তব্যসমূহ