মেজর (অব.) সিনহা হত্যা: অপরাধ ট্রি খুজুঁন

মেজর (অব.) সিনহার হত্যাকান্ডই হোক দেশের সর্বশেষ বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড, সরকারের কাছে অনুরোধ। প্রয়োজনে দ্রুত বিচার আইনে র্স্পশকাতর মামলাগুলোর বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে অতিদ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল চালু করুন। তারপরও বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড বন্ধ হোক। একজনের নেতৃত্বে ২২ মাসে ১৪৪ টি ক্রসফায়ার ২০৪ টি মৃত্যু বিষয়টি যথেষ্ট ভাববার।সরকারের ভাবমূর্তি ভাল রাখতে হলে এগুলোর প্রত্যেকটির তদন্ত ও বিশেষ দৃষ্টি দেয়া উচিত বলে মনে করছি। গণমাধ্যমে অনেক তথ্যেই উঠে আসছে যেটি এই বাহিনীর জন্য ও বিব্রতকর। আস্থার প্রশ্নে এগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন, সেই সাথে করাপ্ট অফিসারদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। দেশের পুলিশ অনেক ভালো কাজ করেছে, এবং করছে। এই করোনাকালীন সময়ে তাদের অবদান মনে রাখার মতো এবং সেটি নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। সেই সাথে কতিপয় করাপ্ট অফিসারের কাজকেও আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা কতিপয় অপরাধীর জন্য এত বড় একটা বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থার সংকট তৈরী হোক সেটি আমরা কেউই চাই না। কিভাবে একজন পুলিশ অফিসার এত কোটি টাকার মালিক হয়, সেটিও ভাববার বিষয় । এদের কেই যখন আবার রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হয়, সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্যও বিব্রতকর। একই ঘটনা আমরা দেখেছি রিজেন্টের সাহেদ করিমের ক্ষেত্রেও। রাষ্ট্রপতি ভবন, গণভবন সব জায়গায় তাকে দেখা গেছে। এদের পৃষ্টপোষকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অপরাধী আপরাধ কখনো একা করে না। সরকারী চাকুরিজীবিদের ক্ষেত্রে সবসময় স্যারের ও স্যার থাকে। কখনো্তই তাদের কে ফাকিঁ দিয়ে অপরাধ সম্ভব নয়।তার ওপর আবার গোয়েন্দা নজরদারী ও থাকে। তাই হেডকোয়ারটারগুলোতে আমলনামা থাকার কথা। তাদের ও দায় রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, ব্যাপক আলোচিত এই মামলাগুলোর অপরাধ ট্রি ( Crime Tree) খুজেঁ বের করার নির্দেশ দিন এবং প্রত্যেকটা শাখা-প্রশাখা খুজেঁ তাদের আইনের আওতায় আনুন। এতে অপরাধীর সাথে সাথে প্রভাবক ও সহ অপরাধীদের নামও উঠে আসবে (নিচ থেকে উপরে যতজন জড়িত)। এরকম ১০ টি মামলারও যদিও অপরাধ ট্রি বের করে শাস্তির আওতায় আনা হয়, তাহলে আমার বিশ্বাস অপরাধ অনেকাংশে কমে যাবে। দুর্নীতির মামলারগুলোর ক্ষেত্রেও একই পথ অনুসরণ করুন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে আমাদের অনেক আশা। আমাদেরকে নিরাশ করবেন না। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমরা জানি আপনার কোন চাওয়া-পাওয়া, লোভ, ভয় কিছুই নেই। থাকারও কথা নয়। আপনি দেশের সবথেকে বেশি সময় ধরে নেতৃত্ব দেয়া প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বে রয়েছে আপনার উজ্জল ভাবমূর্তি। দেশের দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটনের কাজে হাত দিন। মেগা প্রকল্প থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য খাতে মাস্ক, পিপিই, সবখানেই দুর্নীতির করাল গ্রাস। দুর্নীতিবাজরা আজ বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি করছে, চাঁদাবাজি করছে।এদেরকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনুন। বাংলাদেশকে দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থাপন করুন সমগ্র এশিয়ায়।আমরা মনে করি শুধুমাত্র দুর্নীতি ঠেকাতে পারলেই সোনার বাংলা সম্ভব। অন্যথায় অসম্ভব। কবে সেদিন আসবে যেদিন মুদি দোকান থেকে শুরু করে, রাষ্ট্রীয় সব অফিস, সব বাহিনী, সব প্রকল্প, সব প্রতিষ্ঠান, সব মন্ত্রণালয় থাকবে দুর্নীতিমুক্ত। দুর্নীতি নামে কোন জিনিসই থাকবে না। সেটি কিন্তু আপনিও উপহার দিতে পারেন। শুধুমাত্র সেদিনই এদেশ হবে সত্যিকারের ’সোনার বাংলা’। সেই বাংলাদেশের প্রত্যাশায়।

মন্তব্যসমূহ